Monday 9 June 2014

ইসলামের অর্থনৈতিক ব্যবস্হা.....

আমরা যদি পুজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্হা পরীক্ষা করে দেখি, তাহলে দেখতে পাব যে এর দৃষ্টিভঙ্গি হল এটি মানুষের প্রয়োযন (need) এবং এসব প্রয়োজন পূ্রণের উপকরণ নিয়ে কাজ করে।পুজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্হা মানুষের কেবল মাত্র বস্ত্তগত দিকটি নিয়েই আলোচনা করে এবং এটি তিনটি মূল নিতীর উপর প্রতিষ্ঠিতঃ

১.প্রয়োজনের সাথে সংশ্লিষ্ট পণ্য ও সেবার আপেক্ষিক অভাব (relative scarcity) রয়েছে।এর অর্থ হল মানুষের ক্রমবর্ধমাণ প্রয়োযন পূ্রণের জন্য পণ্য ও সেবার অপর্যাপ্ততা ।তাদের দৃষ্টিতে এটাই হল সমাজের অর্থনৈতিক সমস্যা।

২অধিকাংশ অর্থনৈতিক গবেষণা ও অধ্যায়নের ভিত্তি হল উৎপাদিত পণ্যের মূল(value)

৩.উৎপাদন,ভোগ ও বন্টনে দামের (price) ভূমিকা।দাম হল পূজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্হা একটি মৌ্লিক বিষয়।

পণ্য ও সেবার আপেক্ষিক অভাবের ক্ষেত্রে বলা যায়, পণ্য ও সেবা মানুষের অভাব পূ্রণের উপকরণ হওয়ায় এ অবস্হার সৃষ্টি হয় ।তারা বলে মানুষের প্রয়োজন রয়েছে যা পূ্রণ করতে হয় এবং এ প্রয়োজন পূ্রণের উপকরণ থাকতে হবে। এ প্রয়োজনসমূহ পুরোপুরিই বস্ত্তগত (materialistic)। এ গুলো হয় দৃশ্যমাণ (tangible), যেমনঃ খাদ্য ও বস্ত্রের পয়োজন যা মানুষ অনুভব করে এবং অদৃশ্য্মান (intangible) অর্থাৎ সেবার প্রয়োজন ,যেমনঃ ডাক্তারের সেবা,শিক্ষকের সেবা ইত্যাদি।নৈ্তিক প্রয়োজন,যেমনঃগৌ্রব ও সম্মান অথবা আধ্যাতিক প্রয়োজন ,যেমনঃস্রস্টার উপাসনা করা,এগুলো
অর্থনৈতিকভাবে স্বীকৃতি নয়।একারনে এগুলো পরিত্যাগ করা হয়, ফলে অর্থনৈতিক  স্বীকৃতি নয়।একারনে এগুলো পরিত্যাগ করা হয়, ফলে অর্থনৈতিক আলোচনা এগুলোর কোন স্হান নেই।

প্রয়োজন পূ্রণের উপকরণ সমূহকে পণ্য ও সেবা বলা হয়। পণ্য হল দৃশ্যমান প্রয়োজন পূ্রণের উপকরণ এবং সেবা হল অদৃশ্যমাণ প্রয়োজন পূ্রণের উপকরণ। তাদের দৃষ্টিতে যা পণ্য ও সেবাকে প্রয়োজন পূ্রণ করতে দেয়, তা হল পণ্য ও সেবার মধ্যে থাকা সুযোগ ও সুবিধা বা উপযোগ।এই উপযোগ এমণ একটি বৈশিষ্ট যা প্রয়োজন পূরনের জন্য আকাংখিত বস্তু থেকে পাওয়া যায় । যেহেতু প্রয়োজন হল অর্থনৈ্তিক আকা্ঙ্খিত প্রতিটি বস্তুই অর্থনৈতিক ভাবে উপকারী-হোক তা অপরিহার্য বা তা নয়, কিংবা কিছু সংখ্যক লোক এটিকে উপকারী মনে করুক। এটি ততক্ষন পর্যন্ত অর্থনৈতিক ভাবে উপকারী যতক্ষণ পর্যন্ত কেউ একে আকাক্ষিত মনে করে। যেকনো বস্তুকে অর্থনৈ্তিক ভাবে লাভজনক কিনা শুধমাত্র সে দৃষ্টিতে বিবেচনা করা হয় , যদিও বা জনমত , এটিকে অলাভজনক ভাবে বা ক্ষতিকারক মনে করে। সে কারনে মদ ও হাসিস অর্থনৈতিকভীদ দের কাসে লাভ জনক, কেননা কিছুলোক এগোলো চাই।

অ্ন্য কোনো বাস্তবতা বিবেচনায় না এনে কেবল মাত্র প্রয়োজন পুরণ করে-এ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অর্থনৈতিক প্রয়োজন পুরনের উপকরনের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ব করে অর্থাৎ পণ্য ও সেবার দিকে লক্ষ্য করে । সুতরাং সে প্রয়োজন ও উপযোগ এ দুটি যেরুপ বিদ্যমান ঠিক সে ভাবেই দেখে, কিন্তু এগুলো কিরকম হওয়া উচিত সে দিকে দৃষ্টিপাত করেনা অর্থাৎ সে অন্য কিছুকে বিবেচনাই না এনে উপযোগকে প্রযোজন পূরণের নিয়ামক হিসেবে দেখে।সুতরাং কিছু লোকের চাহিদা মিটানোর কারণে সে মদকে অর্থনৈতিকভাবে মূল্যবান হিসেবে বিবেচনা করে এবং অর্থনৈতিক মুল্য বিবেচোনা করে মদ প্রস্তুতকারী হিসেবে মনে করে মদ প্রস্তুতকারীকে একজন সেবাপ্রদান কারী হীশেবে মোনে করে ।কারন এটী কিছু ব্যক্তির অভাব পূ্রণ করে।

এটিই হল পুজিবাদে প্রয়োজন ও তা পূরণের উপোকরনের প্রকৃ্তি।সেকারনে  অর্থনৈতিক সমাজের প্রকৃ্তির তোয়াক্কা করে না , কন্তু তারা অর্থনৈতিক বস্তুগত সম্পদ বা অর্থনৈতিক পণ্যের ব্যাপারে যত্নশীল কারন এগুলো প্রয়োজন পুরণ করে।সুতরাং তাদের মতানুসারে অন্য কোন কছু বিবেচনায় না এনে মানুষের প্রয়োজন পুরোণ এর উপকরণ যোগানের জন্য পণ্য ও সেবা সরকার নিশ্চিত করা দরকার।অর্থাৎ প্রয়োজন পুরোনের উপকরন সরকার করা দরকার। প্রয়োজন পুরোনের উপকরণ হিসেবে পণ্য ও সেবা যেহেতু সীমিত সেহেতু এগুলো মানুষের সব প্রয়োজন পুরোণের জন্য পর্যাপ্ত নয়।কারন তাদের দৃষ্টিতে এই প্রয়োজন সমূহ অসীম এবং ক্রমাগত বৃদ্বি পাচ্ছে । এটি এ কারনে যে, মানুষের রয়েছে এমন একটি প্রয়োজন যা তাকে পুরোণ করতে হয় এবং কিছু প্রয়োজন রয়েছে যা নগরায়নের সাথে বৃদ্বি পায়।এই চাহিদা সমুহ গুনিতক হাড়ে বাড়তে থাকে এবং এগুলি পুরোপুরি পুরোণ করা দরকার।যদিও পণ্য ও সেবা বৃদ্বি পাক না কেন, এ গুলাও কখনও পুরোণ হবার নয়।এই ভীত্তি থেকে অর্থনৈতিক সমস্যার সুত্রপাত হয়, যা হল প্রয়োজনের ভুঝা এবং এগুলো পুরোণের জন্য উপকরণের অপ্রতুলতা অর্থাৎ মানুষের সব অভাব পুরোণের জন্য পণ্য ও সেবার অপ্রতুলতা।

এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সামাজ একটি অর্থনৈতিক সমাস্যা্র সম্মুখীন হয় তা হল পণ্য ও সেবার আপেক্ষিক দুষ্প্রাপ্যতা । এ দুষ্প্রাপ্যতার অপরিহার্য হল কিছু প্রয়োজন আংশিক ভাবে পুরণ হয় এবং কিছু কখনোই পুরণ হয় না। যেহেতু এটাই হল অবস্থা সেহেতু এটি অপরিহার্য যে সামাজের সদস্যগণ এমন আইনের ব্যাপারে একমত হবেন- যা নির্ধারণ করবে কোন প্রয়োজন গুলো পুরোণ হওয়া উচিত এবং কোন গুলো নয়। অন্যকথায় এমন আইন প্রনয়ন করা জরুরি যা অসীম অভাব পুরোণের জন্য সীমিত সম্পদ বন্টনের ব্যা্বস্হা করবে।সুতরাং তাদের দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের চেয়ে প্রয়োজন ও সম্পদকে বেশী গুরুত্ব প্রদান করেছে।অর্থাৎ সমস্যা হল প্রয়োজন পুরণের জন্য সম্পদ কে সুলভ করতে হবে,কিন্তু সেটা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য নয়।সুতরাং এটি অপরিহর্য যে যেসব আইন প্রণ্যন করা হবে সেগুলোকে অবশ্যই সর্বোচ্চ পরিমান উৎপাদনের নিশ্চয়তা প্রদান করতে হবে যাতে করে সম্পদের সর্বোচ্চ সরবরাহ অর্জন করা সম্ভবপর হয়। অর্থাৎ সামগ্রিকভাবে জাতির কাছে পণ্য ও সেবা সরবরাহ করা যায়, অবশ্যই প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে নয়।সুতরাং পণ্য ও সেবার বন্টন উৎপাদনের সমস্যার সাহতে অঙ্গা অঙ্গিভাবে জড়িত এবং অর্থনীতির অধ্যা্যন ও গবেষণার উদ্দেশ্য হল সমাজের ভোগের জন্য পণ্য ওসেবা বৃদ্বি করা।সুতরাং এটি অবাক হওয়ার বিষয় নয় যে সব নিয়ামক জাতির আয়ের (GDP and GNP) আকারকে প্রভাবিত করে সেগুলোর অধ্যায়ন বাদ বাকি দুষ্প্রাপ্যতার সমস্যার সমাধান করার জন্য অন্তত গুরু্তপূর্ণ বিষয়। কারন তারা মনে করে উৎপাদন বৃদ্বি করা ছারা দারিদ্রতা ও বঞ্চনা নিসরন করা সম্ভব নয়।সুতরাং সমাজ যে সব  অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হছে সেগুলোর সমাধান কেবল মাত্র উৎপাদন বৃদ্বির মাধ্যমেই করা সম্ভব।

উৎপাদিত পণ্যের মুল্য বলতে এর গুরত্তের মাত্রাকে বুঝায় ;যেখানে কোন এক বিশেষ ব্যাক্তির বা কোন এক বিশেষ বস্তুর সাপেক্ষে সে মাত্রা নির্ধয়ারিত হয়।প্রথম ক্ষেত্রে এতাকে 'উপযোগের মুল্য' (The value of the Benefit) বলা হয় এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে এটিকে ''বিনিময়ের মুল্য বলা হয়''(Value of exchange) বলা হয়। একটি বস্তু থেকে প্রাপ্ত উপযোগকে যেভাবে বর্ণনা করা যায় তার চুম্ভকাংশ হলঃ একটি বস্তুর যে কোন এককের উপযোগের মুল্য এর প্রান্তিক উপযোগ দ্বারা পরিমাপ করা হয় অর্থাৎ সর্বনিম্ন প্রয়োজন যে পরিমাণ বস্তু দ্বারা পুরণ করা যায় যে পরিমাণ বস্তুর উপযোগ । তারা এটিকে ''প্রান্তিক উপযোগ তত্ব'' বা''The theory of Marginal Utility'' বলে।এর অর্থ হল উপযোগ কেবল মাত্র এর উৎপাদনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পরিমাপ করা হয় না অর্থাৎ উৎপাদন খরচ দ্বারা মুল্যায়িত হয় না, তাহলে সে ক্ষেত্রে চাহিদা বিবেচনা না করে কেবল যোগানই বিবেচনা করে হত। আবার এটিকে কেবল মাত্র ভোক্তার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনা করা ঠিক হবে না ।অর্থাৎ এর উপযোগ এবং চাহিদা বিবেচনা করার সাথে সাথে এর আপেক্ষিক দুষ্প্রাপ্তা বিবেচনা করতে হবে।কেননা এতে করে যোগানের বিষয় হিসাবে না এনে চাহিদা বিবেচনা করা হবে।বাস্তবিকভাবে তারা বলে যে, যোগান ও চাহিদার ভিত্তিতে একত্রে উপযোগকে দেখা উচিত। সুতরাং সর্বনিম্ন যে উপযোগ প্রয়োজন পুরণ করে তার ভিত্তিতে একটি বস্তুর উপযোগ পরিমাপ করা হয় অর্থাৎ সন্তুষ্টির সর্বনিম্ন বিন্দু থেকে ।সুতরাং এক টুকরু রুটির মুল্য সব চেয়ে কম ক্ষুধার্থ থাকা অবস্থায় পরিমাপ করা হবে, সর্বাধিক ক্ষুধার্থ অবস্থায় নয় এবং সেসময় বাজারে রুটি সুলভ নয় এমন অবস্থায় পরিমাপ করা যাবে না।

No comments:

Post a Comment